রেশন নিয়ে ক্রমশই জনমানসে ক্ষোভ বাড়ছে। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গাতেই রেশনে সামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যাকে কেন্দ্র করে গলসি-২ নম্বর ব্লকের খেতুড়া গ্রামে তুলকালাম ঘটে যায়। রেশন দোকানে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। সেই সময় স্থানীয় এক নেতা ঘটনাস্থলে আসে। তাঁকে বেদম মারধর করে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ কোনওক্রমে তাঁকে উদ্ধার করে। অভিযোগ, ওই নেতার মদতেই রেশনে সামগ্রী কম দেওয়া হচ্ছিল।

খেতুড়া গ্রামের রেশন ডিলার শেখ হাজিবুর রহমানের দোকানের সামনে ভিড় করেন গ্রাহকরা। বিক্ষোভ শুরু হয়। গ্রাহক মামণি রুইদাসের দাবি, তাঁকে ৫০০ গ্রাম আটা কম দেওয়া হয়েছে। আবার ক্ষেত্র কর্মকারের অভিযোগ, তাঁকে ২ কেজি আটা কম দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, করোনার কারণে বিনামূল্যে দেওয়া রেশন সামগ্রীর ওজনে কারচুপি করা হচ্ছে। সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ আসগর আলি ঘটনাস্থলে পৌঁছন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই নেতার মদতেই ডিলার কম সামগ্রী দেন। তাঁকে ঘিরে ধরে পুলিশের সামনেই মারধর শুরু হয়। জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ কোনওক্রমে তাঁকে উদ্ধার করে। খণ্ডঘোষের জয়দেব মণ্ডল, আশা রায়, যশোদা মণ্ডলদের অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনার রেশন কার্ড রয়েছে। তাঁদেরও এদিন চাল, গম ও চিনি অনেক ২ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত রেশন সামগ্রী কম দেওয়া হয়েছে বলে
অভিযোগ। যা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবারও মেমারি, মন্তেশ্বর, কালনা-২ ব্লকের পাঁচটি এলাকায় একই অভিযোগ ওঠে। বিক্ষোভও দেখান অনেকেই।

অন্যদিকে, আবেদন করেও যাঁরা এখন কার্ড হাতে পাননি, তাঁদেরও রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁদের কুপনের মাধ্যমে রেশন সামগ্রী দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। আর তা জানার পরই বর্ধমানে খাদ্য ভবনে বহু মানুষ ভিড় করেন। এখানেও ফলে করোনা মোকাবিলায় লকডাউনকে অগ্রাহ্য করে বহু মানুষ ভিড় জমান। খাদ্য ভবন থেকেই কুপন দেওয়া হবে না শুনে অনেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিত সামাল দেয়। খাদ্যদপ্তরের আধিকারিক স্বপন বিশ্বাস জানিয়েছেন, কুপন সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিও ও পুরসভার মাধ্যমে দেওয়া হবে। রেশনে সামগ্রী কম দেওয়ার বিষয়টিও খাদ্যদপ্তর খতিয়ে দেখছে।ডিলারদের একাংশ অবশ্য দাবি করেছেন, এখনও তাঁরা পুরো মাসের সামগ্রী তুলতে পারেননি। তাই এমন সমস্যা হচ্ছে। তবে পুরো মাল তুলে নিয়েও কোনও ডিলার গ্রাহকদের কম দিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে খাদ্যদপ্তর।