যখন করোনা ভাইরাস গ্রাস করে নিয়েছে পুরো বিশ্বকে, ঠিক তখনই সংক্রমণ রুখতে এক অভিনব মাস্ক বানিয়ে ফেললেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাপ্পা রায়

তাঁর আবিষ্কৃত এই মাস্ক ব্যবহার করলে বায়ুমণ্ডল থেকে বাতাস সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ হয়েই নাকে ঢুকবে বলে দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি মাস্ক পরিহিত অবস্থায় কাশি বা হাঁচি দিলে যে ড্রপলেট বের হবে সেগুলি মাস্কের ভেতরে তৈরি হওয়া প্রায় হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের সংস্পর্শে আসবে।

এর ফলে ওই সব ভাইরাসের প্রোটিন উচ্চমানের ভোল্টেজ দ্বারা বিনষ্ট হবে বলে। বাপ্পাবাবু বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, নার্স, সাংবাদিক এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম পেশায় নিযুক্ত মানুষদের জন্য এই মাস্ক অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাঁর কথায় মাস্কের সঙ্গে একটি পাইপ লাগানো রয়েছে। ওই পাইপের ঠিক সামনে একটি বিশেষ ডিভাইস লাগানো রয়েছে যাতে সাড়ে তিন থেকে ছয় ভোল্টের একটি ব্যাটারি রয়েছে।

সেই পাইপের ভিতরে রয়েছে দশটি ফিল্টারিং লেয়ার বা স্তর। দশটি স্তরের মধ্যে দিয়ে বাতাস সম্পূর্ণরূপে বিশুদ্ধ হয়ে ঢুকবে।মাস্কের ভিতরে লাগানো রয়েছে একটি তামার পাত। বিভিন্ন সামগ্রীর মধ্যে একমাত্র তামার পাতেই করোনা ভাইরাস চার ঘন্টা বেঁচে থাকে। যা অন্যান্য সামগ্রীতে ভাইরাসের বেঁচে থাকার সময়ের চাইতে অনেক কম। তিনি  আরও বলেন,

পাইপের সঙ্গে লাগানো ডিভাইসের ব্যাটারির ডিসি ভোল্টেজ মাস্কের তামার পাতের মধ্যে কমপক্ষে হাজার ভোল্টের এসিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। তবে ওই মাস্ক পরে থাকলে মানুষের মুখে তড়িতাহত হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। হাঁচি বা কাশি হওয়ার পর ড্রপলেটগুলো নাক ও মুখ থেকে ছিটকে ওই তামার পাতের উপর পড়বে।

এরপর মুখ থেকে মাস্ক খুলে নিলেই সার্কিট অন হয়ে তামার পাতে কমপক্ষে হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। উচ্চমানের বিদ্যুতের মাধ্যমে প্রোটিন বিনষ্ট হয়ে ভাইরাসটি তার নিজের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলবে বলে দাবি তাঁর।মাস্কের ভিতরের সমগ্র অংশ জুড়েই তামার পাত লাগানো যাবে, তবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করার জন্য তিনি অল্প অংশে তামার পাত লাগিয়েছেন।

পাইপের বাইরের ডিভাইসটি মোবাইল বা পাওয়ার ব্যাঙ্ক থেকে ডেটা কেবলের মাধ্যমে চার্জ দেওয়া সম্ভব। বাপ্পাবাবু বলেন, যেহেতু সাংবাদিক, চিকিৎসক, নার্সদের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় ও বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়, তাই তাঁরা চাইলে মাস্কের বাইরের দিকে ফিল্টার পেপার বা অন্য কোনো পেপার লাগিয়ে রাখতে পারেন।

বাড়ি ঢোকার পর সেই পেপারটি ফেলে দিয়ে অন্য পেপার লাগাতে পারবেন। এর ফলে মাস্ক অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে আড়াইশো টাকা। প্রসঙ্গত, বাপ্পাবাবু এর আগে মেয়েদের সুরক্ষার জন্য বৈদ্যুতিক জুতো, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের বিভিন্ন ডিভাইস,

স্যানিটাইজেশনের নতুন পদ্ধতি বের করেছিলেন। সেগুলো শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এই প্রকাশিত হয়েছে। বাপ্পাবাবুর বর্তমানে আবিষ্কৃত বিশেষ মাস্ক সাংবাদিক, চিকিৎসক ও নার্সদের কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান করবে বলে অভিমত সাধারণ মানুষের।